বালগঞ্জে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ পুলিশ বলছে শ্লীলতাহানি

ইমন শাহ ইমন শাহ

ভ্রাম্যমান সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ৯:৫২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৪, ২০২০ 504 views
শেয়ার করুন

 

বালাগঞ্জ এক গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২১ আগস্ট সন্ধ্যার দিকে উপজেলার বোয়ালজুড় ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটে। এই ঘটনায় ভিকটিম ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে ঘটনার দিন রাতে বালাগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগে মনোহরপুর গ্রামের তছকির আলীর ছেলে রাসেল মিয়াকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ দাখিলের পরিপ্রেক্ষিতে বালাগঞ্জ থানার এসআই জাহিদ দু’দফায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ২৪ আগস্ট ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত রাসেলের সহযোগী মনোহরপুর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে আতিকুর রহমানকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে আসে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সে থানাতেই ছিলো।

ভিকটিম ওই গৃহবূর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমার বিয়ের ছয়মাস হয়েছে। রাসেল আমাকে সব সময় ফলো করতো। ঘটনার দিন মাগরিবের নামাজের পর আমি ঘরে একা ছিলাম। এসময় রাসেল আমার ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ দেয়। ছুরি দিয়ে ভয় দেখিয়ে আমার হাত-পা বাঁধার চেষ্টা করে। আমি জোর জবরদস্তি করায় সে আমার পেটের নিচে সজোরে দুইটা লাথি মারে, আমার মুখ ছেপে ধরে। শরীরের কাপড় খুলে আমাকে জোরপুর্বক ধর্ষণ করে।

একথা কাউকে না বলতে সে আমাকে হুমকি দিয়ে যায়। আমি এই ঘটনার ন্যায় বিচার চাই। ভিকটিমের স্বামী বলেন, আমি আমার মামার বাড়িতে থাকি। রাসেল আমার মায়ের চাচাতো ভাই। আমার স্ত্রী দুই মাসের অন্তঃস্বত্তা। রাসেল আমার স্ত্রীর সাথে এমনটি করবে আমি ভাবতেই পারিনি। পুলিশ বলছে ধর্ষণ প্রমাণ করতে হলে আমার স্ত্রীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল হাপসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা করিয়ে রিপোর্ট নিয়ে আসতে হবে।

আমি গরিব মানুষ আমার হাতে টাকা-পয়সা নেই, স্ত্রীকে নিয়ে কিভাবে পরীক্ষা করাবো। ভিকটিম ও তার স্বামীর কথোপকথনের রেকর্ড সাংবাদিকদের কাছে সংরক্ষিত আছে। এদিকে ধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল উঠেপড়ে লেগেছে। এতে ভিকটিমের দরিদ্র পরিবার ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত রয়েছেন।

প্রভাবশালী মহলের সাথে সুর মিলিয়ে বালাগঞ্জ থানার পুলিশও বলছেন- এটি ধর্ষণ নয়, ওই গৃহবধূকে মারপিট ও শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। এবিষয়ে অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা বালাগঞ্জ থানার এসআই জাহিদ বলেন, এটি ধর্ষণ নয়; টাকা লেনদেনের বিষয়কে কেন্দ্র করে রাসেল নামের ছেলেটা ওই গৃহবধূকে চড়-থাপ্পড় মেরেছে এবং কাপড় ধরে টান দিয়েছে। সোমবার সন্ধ্যার দিকে এবিষয়ে জানতে চাইলে বালাগঞ্জ থানায় ওসির দায়িত্বে থাকা তদন্ত ওসি মুরাদ উল্যাহ বাহার বলেন, ভিকটিম ও তার স্বামীকে থানায় আসার কথা বলা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে পুরো বিষয়টি জানার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।