প্রবাসীদের বোবা কান্না

প্রকাশিত: ৭:২৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৮, ২০২০ 533 views
শেয়ার করুন

প্রবাসে ‘সোনার হরিণে’র খোঁজে আসা বাংলার ছেলেরা করোনায় কর্মহীন হয়ে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে ঘুরছে। একদিকে রঙিন স্বপ্ন অন্যদিকে হতাশা, তিলে তিলে মরছে রেমিট্যান্স যোদ্ধারা। অথচ তারাই দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে ভূমিকা পালন করে থাকে।

বর্তমান বিশ্বে ১ কোটির বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে তারা বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন।
অন্যদিকে তারা যখন বাংলাদেশে যায় তখন বিমানবন্দরে অবমূল্যায়ন ও দুর্ব্যবহার প্রতিনিয়তই শোনা যায়। এসব বিষয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্টদের আরও জোরালো ভূমিকা প্রয়োজন বলে মনে করেন রেমিট্যান্স যোদ্ধারা।

প্রতিটি প্রবাসীর ইচ্ছে থাকে কষ্টের উপার্জন মাস শেষে দেশে পাঠিয়ে দেয়ার। করোনার কারণে প্রবাসীরা দিকহারা হয়ে গেছে। হাজারও প্রবাসী চাকরি হারিয়ে বিভিন্ন দেশে নিম্নমানের জীবনযাপনের ফলে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে।। অবার অনেকেই কষ্ট সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যাও করছে।

আবার কেউ কেউ প্রচণ্ড গরমে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উপার্জিত অর্থ সময়মতো পাচ্ছে না। ফলে ধার-দেনা করে আসা প্রবাসীদের বোবা কান্না ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। নিজের অবস্থান যেমন পরিবারকে বোঝাতে অক্ষম তেমনি ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে তিলে তিলে শেষ হচ্ছে তাদের জীবন।

সেই সাথে বছর ঘুরে আসলে বৈধ কাগজপত্র বা ইকামার নবায়নে প্রবাসীদের গুনতে হয় মোট অংকের অর্থ। আবার অনেক প্রবাসী কর্মহীন ও অর্থ সংকটের কারণে সময়মতো নবায়ন করতে বিলম্বিত হওয়ায় অবৈধ পন্থায় বসবাস করতে হয়। ফলে একদিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভয় অন্যদিকে জীবিকার সন্ধানে নতুন কর্মক্ষেত্রের সন্ধ্যান।
অনেকেই আবার দালালের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারিয়েছে। প্রবাসে আসার পর ভিসার সাথে কাজের চুক্তিপত্র ঠিক না থাকার কারণে নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে বাংলাদেশিরা। ইতোমধ্যে অনেক কোম্পানি কর্মী ছাঁটাইয়ের পাশাপাশি ব্যয় কমাতে লোকবল নিয়ন্ত্রণে রাখছে।

করোনাভাইরাস শিগগিরই নিয়ন্ত্রণে না আসলে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমার পাশাপাশি কর্মহীন প্রবাসীদের দেশে যাওয়ার ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।

তারপরও পরবাসীরা মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তান, আত্মীয়-স্বজন নিকটবর্তীদের জন্য সর্বদা নিজেদেরকে উৎসর্গ করে যাচ্ছে তারা। যদিও বর্তমান সরকার বৈধপথে রেমিট্যান্স প্রেরণে প্রবাসীদের উৎসাহ যোগাতে ২ শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে। আবার কিছু ক্ষেত্রে কম সুদে ব্যাংক ঋণ দিলেও সঠিক নিয়ম না জানার কারণে এসব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অনেকে।