বাংলাদেশের খেটে খাওয়া মানুষ গুলো কেমন আছেন!

তোহুর আহমদ তোহুর আহমদ

লেখক ও শিক্ষক

প্রকাশিত: ৫:১৯ অপরাহ্ণ, মে ২০, ২০২০ 661 views
শেয়ার করুন
বাংলাদেশ হলো লাখো শ্রমিকের ঘাম জড়ানো স্বপ্নের মতো সাজানো গুছানো একখণ্ড অতুলনীয় ভুমি। হঠাৎ করে তার সমস্ত আকাশ শকুনেরা গ্রাস করে ফেলায় থমকে গেছে বাংলাদেশ। বর্তমানে একেকটা দিন অতিবাহিত করছে নাকি মৃত্যুদূত বিষপান করে মরণ যন্ত্রণায় ছটফট করছে তা যেন বিশেষজ্ঞ মহলে ভাবনার বিষয় হয়ে গেছে। ভেবে ভেবে ভাবুকের গায়ে শিহরণ দিয়ে উঠে এই বুঝি তার ভাবনার সমাপ্তি টানতে হবে চিরদিনের জন্য।
 
কে পাঠালো এতো নিপুন করে সাজিয়ে এই বিশাল বাহিনী?
কারহাত দিয়ে তৈরি করলো COVID-19 করোনা ভাইরাস?
 
যার কাছে পৃথিবীর সমস্থ মরণাস্ত্র ও বড় বড় ক্ষেপনাস্ত্রের হার মানতে হচ্ছে।
 
বাংলাদেশ একটি নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ। এ দেশটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হলো মানব সম্পদ। আয়তনে ছোট হলেও দেশটিতে রয়েছে বিপুল পরিমাণ জনসংখ্যা। দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ কার্যক্ষেত্র না থাকায় লক্ষ লক্ষ শ্রমিক দেশের পরিস্থিতি যখন স্বাভাবিক ছিল তখন কাজের অভাবে চোখের জল ফেলে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতো। বেকারত্বের বিষে পরিবারের মুখে হাসি ফুটাতে না পারায় বহু কর্মক্ষম শ্রমিক আত্নহত্যা পর্যন্ত করতে চেয়েছেন। বহু শ্রমিক কাজ না পেয়ে দিনের পর দিন স্বল্পমূল্যে শ্রম দিয়ে যাচ্ছিলেন দেশের স্বাভাবিক সময়টাতে।
 
কিন্তু বর্তমানে কেমন আছেন কেটে খাওয়া দিনমুজুর সেই পরিবারগুলো?
 
আপনারা সবাই অবগত আছেন ২০২০ সালের ৮ই মার্চ বাংলাদেশে বিশ্বমহামারী COVID-19 করোনা ভাইরাস প্রথম সনাক্ত হয়। সেদিন থেকেই দেশের জাতীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বহুরকমের স্বান্ত্বনা দিয়ে আসছেন জনগণকে। ১৭ই মার্চ থেকে ৩১মার্চ পর্যন্ত দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিলো। এরই মধ্যে সারা দেশে লক ডাউন ঘোষণা করা হয়। সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয় দেশের সকল স্থানে। যাতে কেউ প্রয়োজন ছাড়া কোথায় ঘুরাফেরা করতে না পারে। আমাদের দেশের বহু পরিবার আছে যারা দিন আনে দিন খায়। যেদিন তারা কাজ করতে পারে না তাদের পরিবারকে না খেয়ে থাকতে হয়। ২৫-০৩-২০২০ থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় দুই মাস যাবৎ তারা কোন কাজ করতে পারছেন না। যাদের একটি দিন চলতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হতো। বর্তমান অবস্থায় COVID-19 করোনা ভাইরাসের কারণে লক ডাউনে বন্ধি জীবন যাপন করছেন।তাদেরকে তো করোনা ভাইরাস মরতে হচ্ছেনা। তারাতো লক ডাউনের বিষের নাস্থানাবুদ হয়ে যাচ্ছেন। চিন্তা করুণ প্রতিটিদিন তাদের কত কষ্টে যাচ্ছে।
 
বাংলাদেশের একটি লক্ষণীয় ব্যাপার হলো একজন কাজ করলে পরিবারের সবাই বসে বসে খাওয়া। বহু পরিবারে এমন আছে বিদেশে একজন কাজ করে টাকা দেশে পাঠাচ্ছে আর দেশে সবাই বসে বসে খাচ্ছে।কিন্তু COVID-19 করোনা ভাইরাসের কারণে পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই লক ডাউন চলছে। বিদেশে যারা আছেন তারা নিজেরাই চলতে হিমসিম খাচ্ছেন। দেশে যারা আছেন কিছু করার সুযোগ পাচ্ছেন না। এমতাবস্থায় শুধু দেশের দিনমুজুরই নয় সকল শ্রেণী-পেশার মানুষই তাদের পরিবার নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে দিনযাপন করছেন।আসল কথা হলো দেশে যেসব স্বচ্চল পরিবার পরিবার আছেন তারা যেভাবেই হোক চলছেন।কিন্তু অস্বচ্চল পরিবারগুলো অনেক কষ্টে আছেন।
 
চলতি মাসের ১০ তারিখে লক ডাউন শিতিল করা হয়েছে। এটাও মনে হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য বড় বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। লক ডাউন শিতিলের আগে বাংলাদেশের COVID-19 করোনা ভাইরাসে দৈনিক আক্রান্তের পরিমাণ ছিল সর্বোচ্চ ৮০০ জনের ভিতরে। কিন্তু ১০ তারিখের পরে দৈনিক আক্রান্তের পরিমাণ ১৬০০ জনের উপরে চলে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের কিযে অবস্থা হবে বলে বুঝানোর প্রয়োজন মনে করছিনা।আপনারা নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন। তবে এখনো সময় আছে এই মুহুর্তে প্রয়োজন আমাদের সকলের ঐক্যবদ্ধভাবে সুন্দর একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছার। জাতির ঐক্যবদ্ধ সঠিক সিদ্ধান্তই পারবে COVID-19 করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তির অন্যতম পথ খুজে পেতে। সমাজকে বাঁচাতে হলে,সমাজের মানুষকে বাঁছাতে হলে,বাঙ্গালী জাতিকে বাঁছাতে হলে কিংবা বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে জাতীয় ঐক্যের অবশ্যই প্রয়োজন। আমরা জাতীয়ভাবে ঐক্যবদ্ধ নই।আমাদের সবাইকে সকল বিবেদ ভুলে গিয়ে এক হয়ে কাজ করতে হবে।