প্রবাসীদের সমস্যা নিয়ে লন্ডনে হিউম্যান রাইটস এন্ড পীস ফর বাংলাদেশ ইউকের সংবাদ সম্মেলন

নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক

বায়ান্ন টিভি

প্রকাশিত: ১:১৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২ 241 views
শেয়ার করুন

গত ২৬ সেপ্টেম্বর পূর্ব লন্ডনের সোনারগা রেস্টুরেন্ট হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ ইউ কে এর পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এতে যে সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয় সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, জরুরী ভিত্তিতে প্রবাসীদের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন, প্রবাসীদের এনআইডি প্রদানের কাজ দ্রুতকরণ, নো ভিসা স্টাম্প রিকুয়ারম্যান্ট এবং পাওয়ার অফ অ্যাটর্নী আগের মত প্রদান, পাসপোর্ট পেতে বিলম্ব রহিতকরণ ও বিমানের আকাশচুম্বি ভাড়া স্থগিতকরণ ইত্যাদি ।

এইচ আর পি বি ইউকে প্রেসিডেন্ট সাংবাদিক রহমত আলীর সভাপতিত্বে উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, সংগঠনের জেনারেল সেক্রেটারি সাবেক স্পীকার কাউন্সিলার আয়াছ মিয়া। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন, সংগঠনের সভাপতি মোঃ রহমত আলী, জেনারেল সেক্রেটারী কাউন্সিলার আয়াছ মিয়া ও লিগ্যাল সেক্রেটারি সলিসিটর নাবিলা রফিক।
এতে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোঃ আবুল হোসেন, ট্রেজারার মাওলানা রফিক আহমেদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেজারার মোঃ আব্দুল হান্নান , সাবেক এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি শেখ মুদাব্বির হোসেন মধু মিয়া, কাউন্সিলর মোহাম্মদ ওসমান গনি, বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা সুরুজ্জামান চৌধুরী, সাংবাদিক এম এ জামান, আবু সবুর, আবুল কাশেম ও মাসুদ আহমদ প্রমুখ।
এতে বলা হয়, সংগঠনের মাধ্যমে ২০১৯ সাল থেকে প্রবাসীদের জন্য বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠনের দাবি করে আসা হচ্ছে। আর তখন থেকে এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলন, সভা সমাবেশ ও দেশ থেকে আসা এমপি মন্ত্রী ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের সাথে বিভিন্ন সময় মতবিনিময় করা হয়েছে । সাথে সাথে সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রেসিডেন্ট এডভোকেট মনজিল মোরসেদ যুক্তরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন দেশে প্রবাসীদের সাথে মতবিনিময়কালে এ বিষয়টি উপস্থাপন করে আসছেন। তাই এ ট্রাইবুনালটি যত দ্রুত সম্ভব গঠন করা জরুরি । উল্লেখ্য, এ ট্রাইবুন্যাল গঠিত হলে প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা বিশেষ করে আদালত সংক্রান্ত বিষয়গুলো তাড়াতাড়ি সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। যা একজন প্রবাসীর আইনী সুফল পাওয়ার ক্ষেত্রে দারুণভাবে সফলতা আনবে।

নো-ভিসা রিকুয়ার্ড: এর প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বর্তমানে বাংলাদেশ হাই কমিশনের নিয়মানুযায়ী যাদের বাংলাদেশী পাসপোর্ট, ন্যাশনাল আইডি কার্ড, অথবা যাদের বার্থ সার্টিফিকেট আছে তারা যথাযথ নিয়মে আবেদন করে পেতে পারেন। কিন্ত যাদের এগুলি নেই তারা এ ভিসা পাবেন না। সাথে সাথে তাদের স্বামী স্ত্রী বা সন্তানাদিও পাবেন না।
আরেকটি বিষয় হলো একজন বাংলাদেশী বৃটিশ নাগরিক স্বামী স্ত্রী কিংবা সন্তানাদী যদি তাদের স্পাউস অথবা পিতা মাতার পাসপোর্টে নো ভিসা স্টাম্প থাকে সেটাও ভিসা প্রাপ্তীর ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য হবেনা । এমতাবস্থায় অনেকে দেশে যেতে পারছেন না । তাই তাদের মৌলিক অধিকার খর্ব হচ্ছে । এমতাবস্থায় সংগঠনের দাবি আগের মত যেভাবে এগুলো দেওয়া হয়েছে সেভাবে দেওয়া হোক।
এ সম্মেলনের উল্লেখ করা হয় পাওয়ার অব এটনীর ক্ষেত্রে বর্তমানে যাদের ব্রিটিশ পাসপোর্ট তারা এ সুযোগ পাচ্ছেন না । তাই তারা নানাভাবে সমস্যায় পড়েছেন। বিশেষ করে দেশে তাদের জমাজমি হস্তান্তরের প্রয়োজন তারা খুবই বেকায়দায় আছেন। এহেন পরিস্থিতিতে যারা বয়স্ক বা অসুস্থ আছেন তারা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তাই এ পদ্ধতিকে আরো সহজ করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় : বাংলাদেশ বিমান হলো দেশের জাতীয় পতাকাবাহী অন্যতম একটি সংস্থা । এটি একদিকে যেমন তাদের বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালাবে, অন্যদিকে তেমনি জাতীয় সংস্থা হিসাবে জনগণের মৌলিক অধিকারের বিষয়গুলিকে সমুন্নত রাখবে । কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বিমান শুধু নিজেদের বাণিজ্যই করে যাচ্ছে । জনগণ বা প্রবাসীদের ব্যাপারে তারা কোন মানবিক দায়িত্ব প্রদর্শন করছেন না। এর প্রমাণ তাদের আকাশচুম্বি ভাড়া নির্ধারণ, এর ফলে প্রবাসীদের কাছে বিমান টিকেট এখন সোনার হরিণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আয়োজনকারীরা উল্লেখ করেন, প্রবাসীদের জন্য আবেদন করা নতুন পাসপোর্ট পেতে ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত বিলম্ব হচ্ছে । সাথে সাথে নতুন আবেদন ও হাতের লিখা পাসপোর্টের পরিবর্তে এম আর পি জমা নেয়া হচ্ছে না বলে জানা গেছে। এমতাবস্থায় অনেকে দেশ যাত্রা এবং ভিসা প্রসেসিং এর সুযোগ করতে পারছেন না।

উল্লেখ্য, এ সংবাদ সম্মেলনে সম্প্রতি বাংলাদেশে একটি মামলায় সাতজন প্রবাসীর গ্রেফতার এর বিষয় নিয়েও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় ও তাদের জন্য হিউম্যান রাইটস এন্ড পিচ ফর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার আহ্বান জানানো হলে সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় আইনি সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করা হয়।