লন্ডনে জাতীয়পার্টির উদ্যোগে সিনিয়র নেতৃবৃন্দেকে সংবর্ধনা প্রদান

প্রকাশিত: ১:৩৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২ 295 views
শেয়ার করুন

২০২৩ এর জাতীয় নির্বাচনে জাতীয়পার্টি ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে —আজিজ লামা

গত ১৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যা সড়ে ৭ টায় জাতীয়পার্টির উদ্যোগে দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দেের সম্মানে এক সংবর্ধনা সভা অনুষ্টিত হয় । এই সংবর্ধনা সমাবেশে ইংল্যান্ডের সকল ব্রাঞ্চের জাপা প্রতিনিধি বৃন্দ স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেন।
সংবর্ধিত অতিথিবৃন্দ হচ্ছেন আলহাজ্ব কুনু মিয়া -আহ্বায়ক সিলেট জেলা জাতীয় পার্টি, শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় উপস্থিত হতে পারেননি। মুহাম্মদ সাইফউদ্দিন খালেদ কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদস্য সচিব সিলেট জেলা জাপা এবং নজরুল ইসলাম বাবুল আহ্বায়ক সিলেট মহানগর।
যুক্তরাজ্য জাপার সভাপতি মুহাম্মদ মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ আজম আলী ও সিনিয়র সাধারন সম্পাদক শাহ সাহিদুর রহমানের যৌথ সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট ২ আসন এর দুই বারের নির্বাচিত এম পি মাননীয় চেয়ারম্যানের সম্মানীত উপদেষ্টা বীর মুক্তিযুদ্ধা মকসুদ ইবনে আজিজ লামা এবং বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ইউ কে জাপা আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় সদস্য কাউন্সিলার সামছুল ইসলাম সেলিম, সাবেক ইউ কে সদস্য সচিব ও কেন্দ্রীয় সদস্য সাহেদ আহমদ, আতাউর রহমান আতা কেন্দ্রীয় সদস্য সহ জাপার কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সকল সদস্যবৃন্দ এবং কমিউনিটির সম্মানীত শ্রদ্ধেয় ব্যাক্তিবর্গ।
বদরূল হক চৌধুরী এর কোরান পাঠের পর সভায় সিক্রেটারী মোহাম্মদ আজম আলীর স্বাগত বক্তব্যের পর সংবর্ধিত নেতাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ ও আলোচনা পর্ব আরম্ভ হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযাদ্ধা মকসুদ ইবনে আজিজ লামা বলেন আসন্ন ২০২৩ এর জাতীয় নির্বাচনে জাতীয়পার্টি মহান সংসদের ৩০০ আসনে নির্বাচন করবে ইনশাহ্ আল্লাহ এবং এব্যাপারে আমাদের প্রিয় নেতা মাননীয় চেয়ারম্যানও দৃড়প্রতিজ্ঞ। তিনি যুক্তরাজ্য জাতীয় পার্টির কর্মকান্ডসহ এই সভার আয়োজনের জন্য নেতৃবৃন্দের ভূয়শী প্রশংসা করে যুক্তরাজ্য জাপার পূর্ণাঙ্গ কমিটির উত্তর উত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন।
যুক্তরাজ্য জাপার সভাপতি মুজিবুর রহমান তাঁর বক্তব্যের শুরুতে শ্রদ্ধাভরে স্মরন করেন প্রয়াত নেতা ৯ বছরের সফল রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু এইচ এম এরশাদ সাহেব সহ যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম সামছ উদ্দিন, সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সিনিয়র সহ সভাপতি জনাব হাফিজ মজির উদ্দিন, ইউরোপিয়ান কোঅর্ডিনেটার এম এ সুবহান চৌধুরী, সাবেক প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল সিক্রেটারী এম এ মতিন, সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সিনিয়র যুগ্মসম্পাদক আতাউর রহমান, সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সহ সভাপতি খন্দকার ফরিদ উদ্দিন, সাবেক প্রতিষ্ঠাতা প্রেস সিক্রেটারী মাওলানা ইজ্জাদ আলী, যুগ্ম আহ্বায়ক নিজাম উদ্দিন, যুবসংহতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কাজী বারী, প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম কোষাধক্ষ আং রহীম খালিক সহ সকল দেশে-বিদেশে প্রয়াত নেতৃবৃন্ধের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং যুক্তরাজ্য জাতীয়পার্টির সকল শাখা সংগঠনকে আরো গতিশিল করার জন্য নেতৃবৃন্ধের প্রতি আহ্বান রাখেন।
বক্তারা স্মৃতিচারন করে বলেন দেশ যখন অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা ও দুর্নীতিতে নিমজ্জিত তখন একটি দলীয় সরকার দেশ চালাতে ব্যার্থ হয়ে মরহুম এইচ এম এরশাদ সাহেবের কাছে ক্ষমতা হস্থান্তর করেন।
এই নাজুক পরিস্থিতিতে মরহুম জনাব এরশাদ নুতন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্থবায়নে এগিয়ে আসলেন এবং দেশবাসিকে আশার আলো দেখালেন। তাঁর উদার আহ্বান ছিল প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি ত্যাগ করে সুষ্ট রাজনীতি করার -৬৮ হাজার গ্রাম বাঁচলে দেশ বাঁচবে শ্লোগাণের বাস্থবায়নের মাধ্যমে। এরশাদ আরোও বলেছিলেন মুক্তিযুদ্ধারাই এদেশের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট সন্তান। বক্তারা আরোও বলেন দেশের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে তিনি ক্ষমতার বিকেল্দ্রীয়করণের মাধ্যমে উপজেলা সিস্টেম চালু করে রাতা-রাতি দেশের উন্নয়নে আমূল পরিবর্তন আনেন কিন্তু ক্ষমতা বদলের প্রেক্ষিতে এই সিস্টেমের পূর্ণতা আজও সম্ভব হয়নি। আগামীতে জাতীয়পার্টি আবার ক্ষমতায় গেলে ৮টি প্রদেশ গঠনের মাধ্যমে ইহার পূর্ণতা আসবে ইনশাআল্লাহ্।

কুনুমিয়া তাঁর বক্তব্যে জোর দিয়ে উল্লেখ করেন ৬৮ হাজার গ্রাম বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে এই কালজয়ী শ্লোগান নিয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করেছিলেন । ক্ষমতা গ্রহণ করে ১৮ দফা কর্মসূচি নিয়ে এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার শুধু স্বপ্নই নয় তা বাস্তবায়নের জন্য তিনি অবিশ্রাম কাজ করেগেছেন। ৯ বছরের শাসনামলে তিনি তাঁর পরিকল্পনা সফল করতে অনেক এগিয়ে গেছেন। যদিও রাজনৈতিক পরিবেশ তাঁর অনুকূলে ছিলো না। কিন্তু দক্ষতা-যোগ্যতা ও দেশ পরিচালনার মতো অভিজ্ঞতা থাকলে যে কোনো প্রতিকূল পরিবেশই মহৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে যে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না, তা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ প্রমাণ করে দিয়েছেন।
এক ঐতিহাসিক প্রয়োজনের প্রেক্ষাপটে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। স্বাধীনতাত্তর বাংলাদেশে পৌন:পুনিক রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, বিধ্বস্ত অর্থনৈতিক কাঠামো, হত্যা, ষড়যন্ত্র, প্রতিহিংসা, সহিংসতার দুর্দান্ত দাপট গণতন্ত্রকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তিমূলে দাঁড় করাতে সার্বিক ব্যর্থতা, এমন একটা পরিস্থিতিতে সামরিক শাসনের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থার যথাযথ অনুশীলন এবং আর্থ-সামাজিক- প্রশাসনিক অর্থাৎ জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ঔপনিবেশিক আমলের ঘুণেধরা ব্যবস্থা ও ধ্যান-ধারণার পরিবর্তন ঘটিয়ে স্বাধীন দেশের উপযোগী মৌলিক অবকাঠামো গড়ে তোলার গুরু দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে শুরু হয়েছিলো জাতীয় পার্টির অভিযাত্রা। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ পার্টি গঠনের পর থেকে জাতীয় পার্টির ঘোষিত লক্ষ্যের প্রতি অবিচল থেকে জাতিকে একটি সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন। পল্লীবন্ধু এরশাদ এ দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন এক ব্যক্তিত্বের আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন যিনি এখন শুধু এক ব্যক্তি নন তিনি এক মহান প্রতিষ্ঠান, শুধু প্রতিষ্ঠান নয় এরশাদ এক জীবন্ত ইতিহাস এক জীবন্ত কিংবদন্তি -বাংলাদেশের আশীর্বাদ।
সবকিছু ছাপিয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ছিলেন সকল মানবিক গুনাবলি সম্বলিত একজন নিখাদ ভদ্রলোক। তাঁর অমায়িক ব্যবহার দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষকে মুগ্ধ করেছে। তিনি ছিলেন একজন সংবেদনশীল মানুষ। কারো দুঃখ-কষ্ট তিনি সহ্য করতে পারতেন না। মানুষের প্রতি সহমর্মিতা-ভালোবাসা, মানুষকে একান্ত আপন করে নেয়া ছিলো তাঁর চরিত্রের অন্যতম গুন। তিনি তাঁর কর্মে-কীর্তিতে বাংলাদেশের মানুষের মনে যেভাবে জায়গা করে নিয়েছেন তা অমলিন থাকবে চিরকাল।

অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সম্মানীত সদস্য সর্বজনাব কাউন্সিলার সামছুল ইসলাম সেলিম, সাহেদ আহমদ, আতাউর রহমান আতা, এস আই খান, কামাল আহমদ চৌধুরী, মুহাম্মদ আং হাই, সিরাজুল ইসলাম, মুহাম্মদ আজম আলী, শাহ সাহিদুর রহমান, জয়নাল উদ্দিন, খন্দকার মহিউদ্দিন খুকন, মজির উদ্দিন, বদরুল হক চৌধুরী, আলিম উদ্দিন, জুবায়ের আহমদ, হাবিবুর রহমান, রুহুল আমিন খান। ,,,অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সর্বজনাব সামছুল ইসলাম কুবাদ, দুদু মিয়া, ফয়জুল ইসলাম , আজিজুর রহমান, ময়নুল হক, মামুন ইসলাম, খায়রুল আলম আলিম, আহমদ হুসেন, মাহবুব আহমেদ সাজু, রুবেল চৌধুরী, নুরুল হক, মুহাম্মদ জুবায়ের আহমদ, আং খালিক, আব্দুল সালাম প্রমূখ।