সেইফ হোম গ্রেটার সিলেট প্রজেক্টের আওতায় বন্যার্তদের ১ হাজার ঘর নির্মাণ করা হবে

নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক

বায়ান্ন টিভি

প্রকাশিত: ১:১১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১, ২০২২ 411 views
শেয়ার করুন

সেইফ হোম গ্রেটার সিলেট প্রজেক্টের আওতায় সিলেটের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ১হাজার ঘর নির্মাণ করা হবে। বুধবার (২৭ জুলাই) লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাব বেলা আড়াইটায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, এ প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিকভাবে মোট চার ধাপে ২৫০টি করে নির্মিত হবে ১হাজার ঘর। পাকা বা ইটের তৈরী দেয়াল এবং চাল (ছাদ) নির্মান করা হবে মজবুত টিন দিয়ে। দুই রুম বিশিষ্ট আধা পাকা এ ঘরের প্রতিটি রুম এর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ হবে ১৩ ফুট করে। আর প্রত্যেকটি বাড়িতে থাকবে বারান্দা।

প্রত্যেকটি ঘরের আয়তন হবে ৪২৯ বর্গফুট। যা হবে ছোট একটি পরিবারের জন্য নিরাপদ এবং টেকসই স্থায়ী মাথা গোজার ঠিকানা। সেইফ হোম” এর এমন একটি ঘর নির্মান করতে প্রয়োজন হবে মাত্র ২হাজার পাউন্ড।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, সিলেটে এ বছরের বন্যায় যে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সরকারের নানা বিভাগ, অধিদপ্তর, জাতিসংঘের নানা সহযোগী সংস্থ্যা এবং নানা বেসরকারী দাতব্য সংস্থার তথ্য ও গবেষনা মতে সিলেট বিভাগের ৭৫% এলাকা কোন না কোন ভাবে বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। তার মধ্যে সিলেট জেলার ৮০% এবং সুনামগঞ্জ জেলার ৯০% অঞ্চল সম্পূর্ন প্লাবিত হয়েছে। এ বছর বন্যায় ১৮টি জেলায় মোট আনুমানিক আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৮৬ হাজার ৮১১ কোটি ৬৫ লাখ ৫৯ হাজার ৮৭২ টাকা । যার ৮৫% ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে শুধু মাত্র সিলেট বিভাগে। প্রাণ হারিয়েছে ৬৫ জন। প্রায় ৭ লাখ ৭ হাজার একরের ফসল নষ্ট হয়েছে। গবাদি পশু মারা গেছে প্রায় ৩ হাজার। ৬ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাঠদানের অনুপযোগী হয়েছে। শত শত মসজিদ এবং মাদ্রাসাও সম্পূর্ন বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনো প্রায় ১১৮টি গ্রামের অধিকাংশ মানুষ নিজ ঘরে অবস্থান করতে পারে না ।

আর সিলেট বিভাগে সম্পূর্ন বা আংশিক ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১০০ হাজারেরও বেশি।
তবে সংখ্যার এ হিসাব দিয়ে বৃহত্তর সিলেটে ঘটে যাওয়া এবারের ভয়াবহ বন্যার ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন কোন ভাবেই সম্ভব নয়। বহু গ্রাম বা গ্রামের অধকাংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে হাজার হাজার পরিবার এমনও আছে যে তারা শুধু মাত্র ঘর হারিয়েছে এমন নয় পাশা পাশি হারিয়েছে ভিটা মাটিও ।

বৃহত্তর সিলেটের এ বছরের বন্যার ক্ষয়ক্ষতির চিত্র থেকে স্পষ্টত বুঝা যায় যে বন্যা পরবর্তী একটি কঠিন সময় পার করছে সিলেট বিভাগের প্রায় ১ কোটি মানুষ। বন্যার শুরু থেকেই টিভি ওয়ান বৃটেনের নানা বিশ্বস্ত মানবিক ও চ্যারিট্যাবল সংস্থ্যার মাধ্যমে জরুরী ত্রান সরবরাহ ও তা তাৎক্ষনীক ভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরনের ব্যবস্থা করেছে।

বর্তমানে বন্যার পানি নেমে গেলেও আকস্মিক বন্যা যে ভবাবহ ক্ষতি করেছে তা অনুধাবন করে আপনাদের প্রিয় টিভি চ্যানেল টিভি ওয়ান এ সংকটের পুরো সময় সিলেটবাসীর পাশে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার ধারাবাহিতায় জমজম চ্যারিট্যাবল ট্রাস্ট এবং টিভি ওয়ান এর যৌথ উদ্যোগ ”সেইফ হোম গ্রেটার সিলেট” ।

সম্মেলনে আরো উল্লেখ করা হয়, টিভি ওয়ান এ প্রকল্পের জন্য অর্থ বা তহবিল সংগহ্র করার জন্য নিয়োমিত চ্যারিটি এ্যপিল , বিজ্ঞাপন ও নানা মাত্রিক অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। প্রাপ্ত অর্থ জমা হবে টিভি ওয়ানের দির্ঘ সময়ের চ্যারিট্যাবল পার্টনার জমজম চ্যারিট্যাবল ট্রাস্টের সেইফ হোম তহবিলে।

জমজম চ্যারিট্যাবল ট্রাস্ট ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বৃটেনের চ্যরিটি কমিশন এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অফিসের অধীনে এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর নিবন্ধিত একটি মানবিক সংস্থ্যা। এ সংস্থ্যাটি মুলতসিলেটের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য কাজ করছে এবং সবার প্রশংসা কুড়িয়েছে । দির্ঘ তিন দশকে জমজম চ্যারিট্যাবল ট্রাস্ট সিলেট বিভাগে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থ্যান, ইয়াতিম ও বিধবা, নিরাপদ পানি, গৃহ নির্মান এবং মসজিদ নির্মানের মত বহুমুখী প্রকল্প বাস্তবায়ন করে মানবিক কাজের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এছাড়াও সিডর, আইলা, আফ্রান এবং প্রতি বছর বন্যায় জরুরী ত্রান প্রদানের মাধ্যমে দ্বায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে।
এ বছরের বন্যায় সংস্থটি প্রায় ৩হাজার ২শ ৮০ পরিবারকে জরুরী খাদ্য, চিকিৎসা এবং আশ্রয় প্রদান করেছে।

মানবিকক কাজে জমজম চ্যারিট্যাবল একটি দ্বয়িত্বশীল, বিশ্বস্ত এবং জবাবদিহি মূলক সংস্থ্যা। তবুও টিভি ওয়ান ”সেইফ হোম” প্রকল্পের প্রতিটি দানের নিয়োমিত আপডেট দর্শক ও দাতাদের সামনে অত্যন্ত যত্নের সাথে তুলে ধরবে।

সংবাদ সম্মেলনে কমিউনিটির সর্বস্তর মানুষকে সেইফ হোম গ্রেটার সিলেট প্রকল্পে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে জমজম চ্যারিট্যাবল ট্রাস্ট এর চেয়ারম্যান মঈন উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও তৌহিদুল করিম মুজাহিদ এর পরিচালনায় কী-নোট উপস্থাপন করেন টিভি ওয়ানের অপারেশন ডিরেক্টর গোলাম রাসুল।
প্রকল্প বিশ্লেষণ করেন টিভি ওয়ানের ডাইরেক্টর শায়খ আব্দুর রহমান মাদানী।

এইসময় আরো উপস্থিত ছিলেন জমজম চ্যারিট্যাবল ট্রাস্ট এর নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ সেলিম ও মোহাম্মদ আব্দুল মুনিম জাহেদী ক্যারল