বিয়ানীবাজার পৌরসভা নির্বাচন-মেয়র প্রার্থীদের প্রদত্ত সম্পত্তির তথ্য নিয়ে জনমনে প্রশ্ন

প্রকাশিত: ১২:১০ পূর্বাহ্ণ, জুন ৬, ২০২২ 446 views
শেয়ার করুন

সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌরসভা নির্বাচন-১৫.০৬.২২ প্রার্থীদের প্রদত্ত ব্যক্তিগত তথ্যাদি…

বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী যে তথ্য প্রদান করেছেন তা সর্বসাধারণের অবগতির জন্য প্রকাশ করা হল।

 

সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন ১০ জন। ১২ জন ছিলেন, দুজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। লড়াইয়ে থাকা প্রার্থীদের মধ্যে বেশিরভাগ নিজের পেশা হিসেবে ব্যবসা দেখিয়েছেন। কেউ কেউ কৃষিখাতকেও আয়ের পথ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, শুধু মাত্র শিক্ষাগত যোগ্যতায় তফাৎ। 

আগামী ১৫ জুন বিয়ানীবাজার পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে ৩ প্রার্থী দলীয় প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। তাঁরা হলেন- আওয়ামী লীগের মো. আব্দুস শুকুর, জাতীয় পার্টির মো. সুনাম উদ্দিন ও কমিউনিস্ট পার্টির মোহাম্মদ আবুল কাশেম।

 

বাকি ৭ স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন- মো. আব্দুল কুদ্দুছ, ফারুকুল হক, মো. তফজ্জুল হোসেন, মো. আব্দুস সামাদ আজাদ, মো. আব্দুস সবুর, আহবাব হোসেন ও মো. অজি উদ্দিন। এর মধ্যে আব্দুল কুদ্দুছ আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী হয়েছেন।

 

নির্বাচন কমিশনে দাখিলকৃত প্রার্থীদের হলফনামা থেকে জানা গেছে এসব তথ্য।

মো_ আব্দুস শুকুর_নির্বাচনী ব্যয় ও ব্যক্তিগত সম্পদের বিবরণী

হলফনামা অনুসারে, আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আব্দুস শুকুর নিজের ‘ব্যবসা/পেশা’ ঠিকাদারি দেখিয়েছেন। তবে ব্যবসা থেকে কোনো আয়ের তথ্য হলফনামায় উল্লেখ করেননি তিনি। কৃষিখাত থেকে বাৎসরিক আয় ৫০ হাজার টাকা দেখিয়েছেন আব্দুস শুকুর। তাঁর কাছে নগদ দেড় লাখ টাকা, ব্যাংকে এক লাখ টাকা, এক লাখ টাকার স্বর্ণ বা গহনা, ৫০ হাজার টাকার ইলেকট্রিক সামগ্রী ও ৫০ হাজার টাকার আসবাবপত্র আছে। তার মালিকানায় আছে একটি এক্স নোহা গাড়ি। আব্দুস শুকুরের স্ত্রীর নামে ২০ ভরি স্বর্ণ, দেড় লাখ টাকার ইলেকট্রিক সামগ্রী ও আড়াই লাখ টাকার আসবাবপত্র আছে। তাঁর কোনো স্থাবর সম্পদ তথা বাড়ি, দালান, কৃষি বা অকৃষি জমি নেই বলে উল্লেখ করেছেন।

 

ফারুকুল হক_নির্বাচনী ব্যয় ও ব্যক্তিগত সম্পদের বিবরণী

একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালান ফারুকুল হক। ব্যবসা থেকে তাঁর আয় ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। কৃষিখাত থেকে পান ২০ হাজার টাকা, নগদ আছে ২ লাখ টাকা। তাঁর নামে এক লাখ ৬০ হাজার টাকার ইলেকট্রিক সামগ্রী ও আড়াই লাখ টাকার আসবাবপত্র আছে। তাঁর স্ত্রীর নামে আছে ১৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার।

মোঃ তফজ্জুল হোসেন_নির্বাচনী ব্যয় ও ব্যক্তিগত সম্পদের বিবরণী

স্বতন্ত্র প্রার্থী তফজ্জুল হোসেন ব্যবসা থেকে আড়াই লাখ টাকা ও কৃষিখাত থেকে ২ লাখ টাকা আয় করেন বছরে। তাঁর কাছে নগদ দেড় লাখ টাকা, ব্যাংকে ১ লাখ টাকা, ৮০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক পণ্য ও এক লাখ ৮০ হাজার টাকার আসবাবপত্র আছে। স্ত্রীর নামে আছে ১০ ভরি স্বর্ণ।

মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ আজাদ_নির্বাচনী ব্যয় ও ব্যক্তিগত সম্পদের বিবরণী

আব্দুস সামাদ আজাদ একটি ফিলিং স্টেশনে চাকুরি করেন। সেখান থেকে বছরে পান ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। তাঁর কাছে নগদ ১২ হাজার টাকা, ব্যাংকে ৩৫ হাজার টাকা, ৫০ হাজার টাকার ইলেকট্রিক পণ্য ও ৫০ হাজার টাকার আসবাব আছে। তাঁর নামে আছে একটি টয়োটা কার। আজাদের স্ত্রীর কাছে আছে ৩ ভরি স্বর্ণালঙ্কার। তাঁর নামে ৫ শতক কৃষি ও ৩ শতক অকৃষি জমি আছে। একটি টিনশেড বাড়ি আছে তাঁর।

 

মোঃ আব্দুল কুদ্দুছ_নির্বাচনী ব্যয় ও ব্যক্তিগত সম্পদের বিবরণী

স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল কুদ্দুছ ব্যবসায়ী। বছরে এ খাত থেকে তাঁর আয় সাড়ে ১১ লাখ টাকা। এ ছাড়া কৃষিখাত থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করেন তিনি। তাঁর কাছে নগদ দেড় লাখ টাকা, ৭০ হাজার টাকার ইলেকট্রিক সামগ্রী, ২ লাখ টাকার আসবাবপত্র আছে। কুদ্দুছের স্ত্রীর নামে ১০ ভরি স্বর্ণ ও ২৫ হাজার টাকা ইলেকট্রনিক পণ্য আছে।

মোহাম্মদ অজি উদ্দিন_নির্বাচনী ব্যয় ও ব্যক্তিগত সম্পদের বিবরণী

মোহাম্মদ অজি উদ্দিন মার্কেট ব্যবস্থাপনা পেশায় জড়িত। দোকান ভাড়া থেকে তিনি পান দেড় লাখ টাকা, ব্যবসা থেকে আড়াই লাখ টাকা, কৃষিখাত থেকে ৫০ হাজার টাকা। তাঁর কাছে নগদ দেড় লাখ টাকা, ব্যাংকে দেড় লাখ টাকা, ৮০ হাজার টাকার ইলেকট্রিক পণ্য, ২ লাখ ২০ হাজার টাকার আসবাবপত্র আছে। তাঁর স্ত্রীর স্বর্ণ আছে ১০ ভরি।

মোহাম্মদ আবুল কাশেম_নির্বাচনী ব্যয় ও ব্যক্তিগত সম্পদের বিবরণী

কমিউনিস্ট পার্টির মোহাম্মদ আবুল কাশেম আইন পেশায় জড়িত। এ পেশা থেকে তিনি বছরে ৩ লাখ ১০ হাজার ৫৭০ টাকা আয় করেন। তাঁর কাছে নগদ ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯০০ টাকা, ব্যাংকে দেড় লাখ টাকা, ৬ ভরি স্বর্ণ, একটি টিভি, একটি ফ্রিজ, সোফা, খাট, স্টিল আলমারি রয়েছে। তাঁর নামে ৭ শতক অকৃষি জমি আছে।

 

মোঃ সুনাম উদ্দীন_নির্বাচনী ব্যয় ও ব্যক্তিগত সম্পদের বিবরণী

জাতীয় পার্টির সুনাম উদ্দিন নিজেকে ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু হলফনামায় ব্যবসা থেকে তাঁর আয়ের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তাঁর কাছে এক ভরি স্বর্ণ, একটি টিভি, একটি ফ্রিজ এবং সোফা, খাট, শোকেস প্রভৃতি আসবাবপত্র রয়েছে। তাঁর স্ত্রীর কাছে এক ভরি স্বর্ণালঙ্কার আছে। একটি বাড়ি আছে, তবে সেটি তাঁর বাবার নামে।

মোহাম্মদ আব্দুস সবুর_নির্বাচনী ব্যয় ও ব্যক্তিগত সম্পদের বিবরণী

মেয়র প্রার্থী আব্দুস সবুর ব্যবসা থেকে ৯০ হাজার, বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান ভাড়া থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ও কৃষি থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করেন। তাঁর কাছে নগদ এক লাখ ৯০ হাজার টাকা, ব্যাংকে ৫০ হাজার টাকা, ২ লাখ ২০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও ২ লাখ টাকা ৮০ হাজার টাকার আসবাবপত্র আছে। তাঁর স্ত্রীর আছে ২০ ভরি স্বর্ণ।

আহবাব হোসেন_নির্বাচনী ব্যয় ও ব্যক্তিগত সম্পদের বিবরণী

আহবাব হোসেন কাপড় ব্যবসায়ী। এ খাত থেকে তাঁর আয় আড়াই লাখ টাকা। কৃষিখাত থেকে আয় ৮০ হাজার টাকা, নগদ আছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, ব্যাংকে ১ লাখ টাকা, ইলেকট্রিক পণ্য ৮০ হাজার টাকার ও আসবাবপত্র দেড় লাখ টাকার। তাঁর স্ত্রীর নামে ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার আছে।