কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি…?

বিয়ানীবাজার পৌরসভা নির্বাচন

প্রকাশিত: ৪:৫৪ অপরাহ্ণ, মে ১২, ২০২২ 581 views
শেয়ার করুন
আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠিতব্য বিয়ানীবাজার পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী। তাই ক্ষমতাসীন দলটির মনোনীত প্রার্থী হতে প্রায় হাফ ডজন সম্ভাব্য প্রার্থী জোড় তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা সংগঠনের স্থানীয় নেতা কর্মী থেকে শুরু করে জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সমর্থন আদায়ে নানা পন্থায় লবিং চালাচ্ছেন। ইতিমধ্যে তারা ঢাকাস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম উত্তোলন ও জামা প্রদান করেছেন। তাই এবার নির্বাচনী মূল লড়াইয়ের পূর্বে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন অর্জনের লড়াই বেশ জমে উঠেছে। এ অবস্থায় দলটির স্থানীয় কর্মী, সমর্থক, ভোটার, এমনকি অন্যান্য প্রার্থী ও সচেতন মহলে কৌতূহল, কে হচ্ছেন আসন্ন পৌর নির্বাচনে নৌকার মাঝি…?
জানা যায়, গত ৮ মে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের প্রাথমিক প্রক্রিয়া হিসাবে পৌর আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় নৌকার মনোনয়ন পেতে ৬ জন প্রার্থী আবেদন জানান। তারা হলেন বর্তমান পৌর মেয়র, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোঃ আব্দুস শুকুর, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল হাসিব মনিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ময়নুল হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস টিটু, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক জিএস ফারুকুল হক এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পাভেল মাহমুদ। উক্ত সভায় একক প্রার্থী বাছাই সম্ভব না হওয়ায় সকল প্রার্থীর নামই কেন্দ্রে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। উপরোক্ত এই ছয় জন প্রার্থী ইতিমধ্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়নপত্র উত্তোলন ও জমাদান করেছেন। এছাড়াও বিয়ানীবাজার উপজেলা যুবলীগের সাবেক নেতা ও বর্তমানে ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী হোসেন প্রতিনিধির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন। এ সকল প্রার্থীদের থেকে একজন আওয়ামী  লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন।
সূত্রমতে, বিয়ানীবাজার পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন বর্তমান মেয়র, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুস শুকুর। তিনি বিগত নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নে নির্বাচন করে জয়লাভ করেন। দায়িত্ব পালনকালিন ৫ বছরে তিনি দল বা পদকে বিতর্কিত করেছেন এমন কোন কার্যকর অভিযোগ নেই। উপরন্তু তিনি মেয়র পদে দায়িত্ব পালনকালিন সময়ে পৌরসভার সার্বিক উন্নয়ন ও জনকল্যাণ এবং দলীয় কর্মকান্ডে আন্তরিকতার সহিত অগ্রণী ভূমিকা পালন করে বেশ জনপ্রশংসা কুড়িয়েছেন। সেই সাথে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারণী প্রেসিডিয়াম বোর্ডের সদস্য, স্থানীয় এমপি সাবেক শিক্ষান্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের আস্তাভাজন হিসেবে গত ৫ বছরে সাফল্যের সহিত উর্ত্তীণ হয়েছেন। এ অবস্থায় তিনি পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদের মনোনয়ন থেকে তাকে বাদ পড়ার কোন কারণ নেই বলে বিশ্লেষকদের অভিমত। তাই বিয়ানীবাজার পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে মোঃ আব্দুস শুকুর-ই নৌকার মাঝি হচ্ছেন তা অনেকটা নিশ্চিত।
এদিকে পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে জোড় তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক এক সময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা ফারুকুল হক। তিনি ইতিমধ্যে নৌকার মাঝি হওয়ার দৌড়ে নিকটতম প্রার্থী হিসেবে আবির্ভুত হয়েছেন। দলীয় মনোনয়ন বাগিয়ে নিতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সাথে জোড়ালো লবিং অব্যাহত রেখেছেন। কোন কারণে যদি মোঃ আব্দুস শুকুর মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েন, তবে তা অর্জন করবেন ফারুকুল হক।
এছাড়া মেয়র পদে আওয়মী লীগ মনোনীত প্রার্থী হতে জোড় তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ আব্দুল হাসিব মনিয়া। রাজনীতির শেষ বয়সে জনপ্রতিনিধি হয়ে জনকল্যাণ করার প্রয়াসে তিনি দলীয় মনোনয়ন পেতে তৎপরতা চালাচ্ছেন। তাছাড়া আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন অর্জনে তৎপর রয়েছেন উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস টিটু। সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পাভেল মাহমুদ। সাবেক উপজেলা যুবলীগ নেতা ও ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী হোসেন। শেষ পর্যন্ত কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি তা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায়ই চূড়ান্ত হবে।
বিয়ানীবাজার পৌরসভা নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১৭ মে মনোনয়নপত্র জমা দানের শেষ তারিখ। এ অবস্থায় ১৭ মের পূর্বেই চূড়ান্ত হবে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন। সূত্রমতে, আগামী ১৫ মে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের  কেন্দ্রীয় কমিটির অনুষ্ঠিতব্য সভায় দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত হবে। তাই শেষ বেলায় এসে দলের মনোনয়ন অর্জন করতে কোমর বেধে মাঠে নেমেছেন মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীরা। এ ক্ষেত্রে দলীয় মনোনয়ন থেকে বাদ পড়া প্রার্থীদের মধ্য থেকে ২ জন বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে নির্বাচন করার আভাস রয়েছে।