কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিলো সে মরে নাই

প্রকাশিত: ৪:৪৮ অপরাহ্ণ, মে ১০, ২০২২ 447 views
শেয়ার করুন

বাঙ্গালীর নেতা ছিলেন লুৎফুর রহমান। আবারো নেতা হয়েছেন তিনি। লন্ডনে বাঙ্গালী জাতিসত্তার অস্তিত্ব ও সকল সম্মান ছিলো লুৎফুর রহমানের ঝুড়িতে। জনাব লুৎফুর আইনি জটিলতার কারণে ক্ষমতা হারানোর পর তার সকল প্রভাব পড়ে ছিলো বাঙ্গালী জাতিসত্তার উপরে।তার কারণ তিনি একজন বাঙ্গালী জাতিসত্তার সন্তান।এবারের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যদি তিনি পরাজিত হতেন তাহলে তার সে পরাজয় হতো বাঙ্গালী জাতির পরাজয়।লুৎফুর পরাজিত হলে বাঙ্গালী জাতিসত্তার উপর একটি দূর্নীতিবাজ এবং লুটেরাবাজ জাতির তকমা সীলমোহর স্থায়ীভাবে পড়ে থাকতো।

লন্ডনের টাওয়ার হেমলেট কাউন্সিলে একটি পরিবর্তন অতি জরুরী ছিলো।এবং তা হয়েছে ও। বাঙালী জনগণ তাদের সকল গ্লানি মোছে শক্ত হাতে আবার রাস্থায় ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন তাদের মা মাটি ও তার মানুষের হারানো অস্তিত্ব ফিরে পাওয়ার যুদ্ধে।তারা সকল ঝড় অতিক্রম করে যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে ঘরে ফিরেছেন।

২০১৪ সালের নির্বাচন পরবর্তী সকল আইনি জটিলতার কারণে লুৎফুর রহমানের সকল পদ পদবী হারাতে হয়েছিলো।আইনের নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে তিনি ১৮ সালের নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতেও পারেননি।সে কারণে সকল জাতির সকল মানুষের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা ছিলো কালিমালিপ্ত। তেমনি তিনি বাঙ্গালী হওয়াতে বাঙ্গালী জাতির সম্মান ও গ্রহণযোগ্যতা ছিলো কালিমালিপ্ত।

২০১৪ সাল পরবর্তী দীর্ঘ বছর গুলোতে তিনি একাকীত্ব জীবন পার করেছেন।তার এ একাকীত্ব জীবনে অনেক বার রাস্তায় তাকে একা হাটঁতে দেখেছি।মাঝে মাঝে পথ আটকে কথা বলেছি, কখনো পথ এড়িয়ে গেছি।

মেয়র রহমানকে একসময় দেখছি রাস্থায় জনতার বহর নিয়ে হাঁটতে।তার কাছ থেকে নানা ভাবে সে সকল লোকেদের উপকৃত হতেও দেখেছি।তার একাকীত্বের বেদনায় ভারাক্রান্ত সময়ে সেই সকল লোকেরাও বহু দূরের তারা হয়ে ছিলেন।লুৎফুর রহমান আবারও তার জনতার ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন আনন্দ শোভাযাত্রায় ঝড় উঠেছে।সেই সকল ভোরের কোকিলদের সরব উপস্থিতি বিরাজ করছে।অনেক সাংবাদিককে ও দেখেছি সোশ্যাল মিডিয়ার সে আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নিতে।নির্বাচনের আগে তাদের কারো কোনো ভুমিকা চোখে পড়েনি।তাদের এমন ছবি আর লেখা পোষ্ট দেখ অনেকটা সেই গল্পের মতোন মনে হয়।”ছেলে ভালো কিছু করলে বাবা খুশি হয়ে বলেন আমার ছেলে। আর ছেলে খারাপ কিছু করলে বাবা মাকে ডেকে বলেন তোমার ছেলে”।

লন্ডনের মিডিয়া পাড়ার অনেক সাংবাদিক ও তাদের প্রতিষ্ঠান লুৎফুর রহমানের আমলে নানা ভাবে নানা অনুদান, উপঢৌকন গ্রহণ করে ছিলেন। তার দূঃখের সময় তারাও তার থেকে দূরে ছিলেন।কাউকে তার সাথে একাকী পথের সঙ্গী হতে দেখিনি।

এবারের নির্বাচনে বাংলা মিডিয়া নির্বাচন নিয়ে তেমন একটা সরব ছিলোনা।কোন প্রার্থীর পক্ষে বিপক্ষে কোনো ধরণের প্রচার-প্রচারণা ও চোখে পড়েনি।

গত জাতীয় নির্বাচনে বাংলা মিডিয়া খুব সরব ছিলো।সকল মিডিয়ায় শিরোনাম ছিলেন বাঙ্গালীর চার কন্যা।দু’একটাতে দেখেছিলাম পাঁচ কন্যা নিয়ে সংবাদ।আসলে লন্ডনের পাঁচ কন্যা সহ ওয়েলসের এক কন্যা মিলে মোট ছয় কন্যা অংশ গ্রহণ করেছিলেন সেবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে।বাংলা মিডিয়া পাড়ার হিংসা ও মানষিক সংকীর্ণতার কারণে এক কন্যা তাদের হিসেব থেকে বাদ পড়ে ছিলেন।আসলে দুয়ে দুয়ে যোগ/গুণ করলে চার ই হয়। সলক বাঙ্গালী প্রর্থীর থেকে বাংলা মিডিয়ার হিসাব থেকে বাদ পড়া কন্যার নির্বাচনি ফলাফল পরাজিত হলেও তাহা ছিলো সিংহের সাথে সিংহের লড়াই।

কাদম্বিনী দেবী আত্মহত্যা করে মরিয়া প্রমাণ করেছিলো সে মরেনাই।তেমনি লন্ডনের টাওয়ার হেমলেট কাউন্সিলের জনগণ তাদের ভোট দিয়ে আবারো সাবেক এ মেয়রকে নির্বাচিত করে প্রমাণ করেছেন লুৎফুরের জনপ্রিয়তা ও তার প্রতি তাদের অকুণ্ঠ ভালোবাসা এখনো মরেনাই,অক্ষুণ্ণ রয়েছে।
লুৎফুর ও তা প্রমাণ করেছেন,জনগণ এখনো তাকে ভালোবাসেন।তিনিও তার জনগণের কাছে ছিলেন,এখনো আছেন,থাকবেন। আশাকরি জনগণের সে ভালোবাসার মূল্য দেবেন লুৎফুর।তিনি আগের মতন যাকে তাকে উপঢৌকন দিয়ে,অনুদান দিয়ে খুশি করে জনগণের ভালোবাসা ও বাঙালী জাতিসত্তার রক্তাক্ত বেদীতে জুতা পায়ে হাঁটবেন না।

লেখক
এস এম শামসুর সুমেল
সাংবাদিক
সাংস্কৃতি কর্মী
ইমেইল ঃ shamsursumel@yahoo.com