প্রবাসীদের নিয়ে প্রধান মন্ত্রীর ৩টি নির্দেশনা মানা হচ্ছে না কেন ?

প্রকাশিত: ২:৪১ অপরাহ্ণ, মে ১৭, ২০২০ 858 views
শেয়ার করুন
  • আমি ২টি তথ্য দিয়ে শুরু করতে চাই। এক:জনশক্তি রপ্তানিতে সারা বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ এর খরচ সবচেয়ে বেশী। দুই: দিনশেষে প্রবাসীদের আয়-রোজগার কম। তার মানে প্রবাসীরা বাংলাদেশীরা কত ধরনের সমস্যার মধ্যে আছে তার অন্ত নেই।প্রায় পাঁচ দশক হতে চলেছে আমাদের স্বাধীনতার।এত দিন পর ও পুরোটাই যেন রাষ্ট্রিয় অব্যবস্থাপনার মধ্যে রয়ে গেছে।আজ থেকে প্রবাসে,যে মানুষ গুলো যাচ্ছে তার হিসাব ঠিকই রাখি, কিন্তু প্রবাস ফেরত মানুষের সঠিক তথ্য বা সংখ্যা আমাদের জানা নাই,এবং জানার চেষ্টা ও করি না। শুধু সৌদি আরব থেকে ২১ হাজার প্রবাসী ফিরে আসছে।

এভাবে সংখ্যা টা বলি যদি এ বছর মিলিয়ে প্রায় ৩৫ হাজার এবং গত এক বছরে সব মিলিয়ে প্রায় ২ লক্ষ। কিন্তু ২ লক্ষ শুধু ফিরে এসেছে এক কাপড়ে।এ ফিরে আসার সঠিক সংখ্যা রাষ্ট্রের নিরুপন খুবই প্রয়োজনীয় ছিল। প্রবাসীর সাথে প্রতারনা কখন থেকে শুরু হয় দেখেন,যখন একজন কর্মী ঠিক করে আমি প্রবাসে যাব,তার পাসপোর্ট করা থেকে শুরু করে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ,গ্ৰামের দালাল,শহরের দালাল,ঢাকার দালাল,তার পর আসে রিক্রুটিং এজেন্সিতে, সেখানে এসেও নিশ্চিত নয় ,কোন রিক্রুটিং এজেন্ট ভাল না খারাপ।এর পর ফ্রি ভিসায় মধ্যপ্রাচ্যে যাচ্ছে।তারা তাদের বেতন জানে না কত পাবে,তারা জানে না কোন কাজে যাচ্ছে,কতদিন তারা থাকবে সম্পন্ন অনিশ্চিয়তা নিয়ে প্রবাসে আসছে।

একটি হিসাব করে দেখেন, যদি এক জন পরিচ্ছন্ন কর্মী মধ্যপ্রাচ্যে যায় সে যদি ১০লক্ষ বা ৮লক্ষ খরচ করে আসে,এখানে সে বেতন পায় সর্বোচ ১৫০০০ টাকা,বছরে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা অর্থাৎ ৩ বছরে তার কামাই করা টাকার পরিমান দাড়ায় ৫লক্ষ ৫০ হাজার ।পরে ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়,৩ বছর বা ২ বছর পরে,তখন ভিসা লাগানোর চক্করে পড়ে বিপদ গ্ৰস্থ হয়ে পড়ে, সঞ্চিত অর্থ ব্যায় করে তার ভিসা লাগাতে হয়। হ্যা ,এর মধ্যে ও অনেক সফল মানুষ ও আছে,সফল হচ্ছে। কিন্তু দেখতে হবে তা সংখ্যায় কত? এখানে আমরা দেখতে পাই প্রায় ওয়ান-থার্ড মাইগ্ৰেশন বিফল বা প্রবাস যুদ্ধে হারিয়ে যাচ্ছে।দুঃখের বিষয় হলো এই যে আমি দেখতে পাচ্ছি না বা খুব একটা নাই বললে চলে,তাদের বাচ্চা রা কোন ইউনিভার্সিটি থেকে ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার, হয়ে বের হতে।

তারা আবার রেমিট্যান্স যুদধা। শুধু তা না এই প্রবাসী কর্মী জমি – জমা বিক্রি করে বা ব্যাংক লোন বা আত্নীয়ের কাছ থেকে লোন করে প্রবাসে পাড়ি জমায়।এ ক্ষেত্রে রাষ্টের কোন বিনিয়োগ নাই বা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।এ পুরো প্রক্রিয়াটি যখন ই শুনি তখন আমরা অনিয়ম ,প্রতারনা বন্ধ করব শুধু গলাবাজি ই করে থাকি, দিনশেষে কিছু ই দেখতে পাই না।
অথচ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রী পরিস্কার ভাবে ৩টা কথা বলেছেন —-
১- আমি দেখতে চাই না আমার কোন প্রবাস যাত্রী কর্মী প্রতারিত হউক। ২-কম খরচে যাবে ৩-এবং দক্ষকর্মী যাবে।

কিন্তু নির্দেশনার পর ও তা বাস্তবায়ন কেন হচ্ছে না।রাষ্ট্র কেন কান,চোখ বন্ধ করে আছে। গত বছর প্রায় ৪০ হাজার লোক লাশ হয়ে ফিরেছে,।তার মধ্যে ৯৪ শতাংশ লোক মুত্য হয়েছে অস্বাভাবিক,হয়তো তারা ব্রেইন স্টক করে,নয়তো হার্ট অ্যাটাকে। উল্লেখ্য যে, শুধু গত বছর সৌদি আরব থেকে মহিলা কর্মী ফিরেছে সাড়ে ৯ হাজার ,তারা কেউ যৌন হয়রানি,বা শারীরিক নির্যাতন এর স্বীকার।কেউ বা আবার অবৈধ পথে ইউরোপ পাড়ি জমাতে গিয়ে সাগর পথে মৃত্যু। সুতরাং রাষ্ট্রীয় অব্যবস্থাপনা, এই দালাল চক্রের, রিক্রুটিং এজেন্সি,এ সব থেকে খুব শীঘ্রই বের হয়ে আসতে হবে।নতুবা মধ্যম আয়ের দেশ হয়ে ও আমাদের উজ্জ্বল ভাবমুর্তি হারাতে হবে বা হারাতে বসেছি।তাই এ সব দালাল , রিক্রুটিং এজেন্সিরকে বাদ দিয়ে বর্তমান সরকারের ডিজিটাল প্রযুক্তিরকে কাজে লাগিয়ে প্রবাসীদের দূরভোগ লাগবে,পর রাষ্ট্র মন্ত্রনালয়,স্ব-রাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সমন্বয়ে বা প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।যাতে প্রবাসীরা আর যাতে কিছু না হারিয়ে,কিছু পাওয়ার আশায় বুক বাঁধতে পারে।কারন প্রবাসীরা সারাজীবন ত্যাগে বিশ্বাসী,ভোগ তারা খুব কমই করে সমাজ,সংসার,রাষ্ট্র থেকে ।আমরা —

কথায় না বড় হয়ে , কাজে বড় হব। এটাই যেন হয় আমদের সকলের আজকের দিনের শপথ এবং কাজের পূর্বের মূলমন্ত্র।

——————————————————————

লেখক: সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, বর্তমানে আমিরাত প্রবাসি