দেশে সংখ্যালঘুদের নির্যাতনে দুবাইস্থ কনসুলেটে স্মারকলিপি প্রদান

লুৎফুর রহমান লুৎফুর রহমান

সম্পাদক ও সিইও, বায়ান্ন টিভি

প্রকাশিত: ৭:৫৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৯, ২০২১ 1,175 views
শেয়ার করুন

আজ ১৯-১০-২০২১ইং রোজ মোঙ্গলবার দুপুর ১২টায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসী সনাতনী ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে, বাংলাদেশে সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের ওপর চলমান সহিংসতা, লুটপাট, অগ্নীসংযোগ, ধর্ষণ এবং হত্যার প্রতিবাদে, দুবাইস্থ বাংলাদেশ কন্সুলেটে মানববন্ধন এবং স্মারকলিপি প্রেরন করা হয়। মান্যবর কনসার্ল জেনারেল বি এম জামাল হোসেন কোন্সুলেটের পক্ষ থেকে এই স্মারক লিপি গ্রহন করেন।

স্মারক লিপি প্রেরনকালে প্রবাসী সনাতনী ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন:- বাবু অজিত কুমার রায়, বাবু সুজন চক্রবর্তী, বাবু উত্তম হাওলাদার, শ্রী বলদেব প্রভু, বাবু সুনীল কুমার শীল, বাবু সন্জীত কুমার শীল, বাবু কাজল দেবনাথ, বাবু সুজল কান্তি দত্ত, বাবু শিবলু দাশ এবং সাথে ছিলেন আরো অনেক সনাতনি ধর্মাবলম্বীরা।

স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন গত ১৩ই অক্টোবর ২০২১ ইংরেজী, রোজ বুধবার, বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়ীক সোনার বাংলাকে, কতিপয় ধর্মান্ধদের দারা, বাংলাদেশের সাম্প্রদায়ীক সম্প্রীতি নষ্ট করার অসৎ উদ্দেশ্যে , সনাতন ধর্মালম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব, শারদীয় দৃর্গাপুজা উপলক্ষে, কুমিল্লার নানুয়া দিঘীর পাড় পুজা মন্ডপে, পবিত্র কোরান অবমাননার এক সাজানো ঘটনাকে কেন্দ্র করে,
সমগ্র বাংলাদেশে বরবরের ন্যায়, ধর্ম অবমাননার কথিত অভিযোগে,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উস্কানি দিয়ে, এই বছরের শারদীয় দৃর্গাৎসুবের আন্দকে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে একটি চিন্হিত গোষ্ঠী।বিগত কয়েকদিন ধরে, বিভিন্ন গন মাধ্যমের খবর এবং বাংলাদেশে অবস্থিত আমাদের আত্মীয় স্মজন এবং পরিবার বর্গের কাছ থেকে আমরা জানতে পারি যে, সনাতন ধর্মাবল্ম্বীদের অস্তীত্ত বিলীন করার অসৎ উদ্দেশ্যে, কুমিল্লা, চাঁদপুর, হাজীগন্জ, নোয়াখালী, চৌমুহনী, ফেনী, চট্রগ্রাম, কক্সবাজার এবং রংপুর সহ, বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে শত শত প্রতীমা, মন্দীর,হিন্দুদের বাড়ীঘর এবং ব্যবসা প্রতীষ্ঠানে সুপরিকল্পিতভাবে ,হামলা, ভাংচুর, অগ্নীসংযোগ এবং লুটপাঠ চালায়।
তারি ধারাবাহিকতায়, গত ১৫ই অক্টোবর ২০২১ রোজ শুক্রবার, নোয়াখালী জিলার চৌমুহনীতে ইস্কন মন্দীর, শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দীর, শ্রীশ্রী রামঠাকুর আশ্রম, শ্রীশ্রী বাবা লোকনাথ মন্দীর, শ্রীশ্রী কালী মন্দীরে, অতর্কীত হামলা চালিয়ে ইস্কন মন্দীরের ১ জন পুজারী এবং ২জন সেবককে নৃসংস ভাবে কুপিয়ে হত্যা সহ আরো ২শতাধিক ভক্তকে আহত করা হয়।

সে সময় উক্ত মন্দীর কতৃপক্ষের পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে বারংবার অনুরোধ জানানোর পরেও ওনাদের পক্ষ থেকে কোন রকম কোন পদক্ষেপ নেননি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। প্রশাসনের এই অবহেলার সুযুগে, ধর্মীয় উগ্রবাদীরা আরো ব্যাপরোয়া হয়ে পার্শবতী হিন্দু পরিবার এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ধংশযোগ্য চালায়। চাঁদপুর জেলার হাজীগন্জে, মা এবং মেয়ে সহ একি প,ইবারের ৩ জন কে গন ধর্ষণ করা হয় এবং সেখানে রেহাই পায়নি ১০ বছরের শিশু কন্যাও। সেই ১০ বছরের শিশু কন্যাটি মৃত্যুর সাথে লড়তে লড়তে, গত ১৫ই অক্টোবর মৃত্যু বরন করে। হাজীগন্জে মানিক সাহা নামে আরো এক ভক্তকে নির্মম ভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। মানিক গন্জে ৪ জনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।


সর্ব শেষ রংপুরের পীরগন্জে জেলে পাড়া সহ শতাধিক ঘরবাড়ীতে অগ্নীসংযোগ এবং লুটপাট করা হয়।
আমরা প্রবাসীরা, সচেতন নাগরীক হিসেবে, আপনার মাধ্যমে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন, প্রশাসনিক ব্যর্থতার কারনে সংঘঠিত এই হামলার দায়ভার কার? মন্দীর সমুহে হামলা ও প্রতীমা ভাংচুর করা কি ধর্ম অবমাননা নয়?
সনাতন ধর্মের অনুশারী হওয়া কি আমাদের অপরাধ? সর্ব কালের সর্ব শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, জাতির জনক ব্ঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশের সংবিধানে, সকল ধর্মের সম অধিকার নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট, অসাম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের সপ্নাদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যার পর থেকে উগ্রবাদী ধর্মান্ধ গোষ্ঠী, নানান অযুহাতে একের পর এক এই ধরনের অপতৎপরতা চালিয়ে আসছে।